মোঃ মঞ্জুরুল, পিতা-মৃত কাজী আঃ জলিল নামক একজন হাজতি বন্দি মাত্র 84,000/- টাকার বৈদ্যুতিক বিলের মামলায় 01 বছর 01 মাস হাজতবাসের পর কারা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় কারাগার থেকে অদ্য 09.09.2020 তারিখ জামিনে মুক্তি পেল। তার বৃদ্ধ মা ছাড়া আর কোন নিকট আত্মীয়-স্বজন ছিল না যে তার মামলাটি পরিচালনা করে তাকে কারাগার হতে জামিনে মুক্ত করবে।
এমনকি সে মামলা সংক্রান্ত কোন তথ্যও দিতে পারছিল না। তার মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে ডেপুটি জেলার জনাব মোঃ ফখরউদ্দিন বিদ্যুৎ অফিসে ফোন দিয়ে মামলাটির আদালত এর নাম জানতে পারে এবং স্থানীয় প্যারালিগ্যাল সদস্যদেরকে জামিনের জন্য তথ্য প্রদান করেন। পরবর্তীতে প্যারালিগ্যাল সদস্য অবহিত করেন যে, জামিনের আবেদন করতে হলে কিছু টাকা জরিমানার 84,000/- টাকার বিপরীতে জমা দিতে হবে এবং সে কারাগার হতে মুক্তির পর আস্তে আস্তে কিস্তি আকারে অবশিষ্ট টাকাগুলো পরিশোধ করবে।
এ বিষয়ে ডেপুটি জেলার জনাব মোঃ ফখরউদ্দিন উক্ত হাজতি আসামী মোঃ মঞ্জুরুলকে ডেকে বলেন যে, তুমি যদি কারাগার হতে বের হতে চাও তাহলে তোমাকে এই তোমাকে এই শর্ত পূরণ করতে হবে। উক্ত বন্দি তখন ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল। কিছুক্ষণ পর মঞ্জুরুল বলল স্যার আমার জীবনে কেউ আমাকে কোন দিন উপকার করে নাই। তাই ভাবছি! স্যার পৃথিবীতে শুধু বৃদ্ধা মা ছাড়া আমার আর কেউ নাই যে আমাকে কারাগার হতে বের করবে এবং আমার মায়ের কাছে মামলা সংক্রান্ত কোন কাগজপত্রও নেই।
পরে প্যারালিগ্যালের সদস্যদের সাথে কথা বললে প্যারালিগ্যালের এ্যাডভোকেট শিউলি আপা জানান যে, তারা প্যারালিগ্যালের পক্ষ থেকে 500/- টাকা দিতে পারবে। তখন কারা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আরও 500/- টাকা দিয়ে মোট 1,000/- টাকা জমা দিয়ে জামিনের আবেদন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। টাকাটা কোথায় এবং কিভাবে জমা প্রদান করা হবে এজন্য বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-1 ও ২ এর নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বললে তিনি জানান যে বিষয়টি বিজ্ঞ আদালতের এখতিয়ারাধীন।
পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালতের পেশকারকে জানানো হলে এ বিষয়ে উনি বললেন করোনা মহামারীর জন্য ও কোন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলতে পারব না। অবশেষে গত 08.09.2020 তারিখ পেশকারের সাথে যোগাযোগ করে তাদের সহযোগিতায় মঞ্জুরুলের জামিন হয় এবং অদ্য 09.09.2020 তারিখ সন্ধ্যায় তাকে কারাগার হতে জামিনে মুক্তি প্রদান করা হয়।
একজন ডেপুটি জেলারের আন্তরিক নির্দেশনায় এবং স্থানীয় প্যারালিগ্যাল সদস্য ও কারারক্ষিদের সহযোগিতায় এহেন একজন নিতান্ত অসহায় বন্দি কারাগার হতে জামিনে মুক্তি পেল। এটা নিঃসন্দেহে একটা ব্যতিক্রম গল্প। যা আমাদের সকলকে আরো ভাল কাজ করার উৎসাহ যোগাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।